বিধ্বস্ত সেই যুদ্ধবিমানের তদন্তে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তকারীরা দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ে প্রযুক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী ও কৌশলগত উপায়ে প্রাপ্ত খণ্ড খণ্ড সূত্র মিলিয়ে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন। তাতে উঠে আসে, বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট মাঝ আকাশে চক্বর কাটতে কাটতে ফোনে ৫০ মিনিট কথা বলেন।
গত ২৮ জানুয়ারি যুদ্ধবিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার আইয়েলসন বিমানঘাঁটির রানওয়েতে ধাক্কা খেয়ে বিধ্বস্ত হয়। তার আগেই আকাশে থাকাকালীন সেটির সমস্যা ধরা পড়ে। পাইলট নিরাপদে প্যারাস্যুট দিয়ে বিমান থেকে ইজেক্ট করার আগ পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের আপ্রাণ চেষ্টা চালান। কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসছিল না। শেষ মুহূর্তে বিমানটি ঘূর্ণি খেলে পাইলট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে হাল ছেড়ে দেন।
আরও পড়ুনঃ ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের খবর যে কারণে অস্বীকার করল চীন
অত্যাধুনিক মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-৩৫। এটি বহুমাত্রিক অভিযানে সক্ষম। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিমানটির উড্ডয়ন ও অবতরণ অনেকটা নিরাপদ। কিন্তু ওই বিমানটির পাইলটের ভাগ্য সহায় হয়নি।
সিএনএনের হাতে আসা এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিমানটির নোজ ও প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ারের হাইড্রোলিক লাইনে বরফ জমে যায়। এতে গিয়ার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আর এটিই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।
পাইলট সমস্যা সমাধানে আকাশে উড়তে উড়তেই প্রায় ৫০ মিনিট ধরে প্রকৌশলীদের সঙ্গে কনফারেন্স কলে কথা বলেন। তিনি সমস্যার সমাধানের নানা চেষ্টা করেন। অপর প্রান্তে কলে থাকা প্রকৌশলীরা তাকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ৫ আগস্ট হাসিনার ভারত পলায়ন, সেদিন দিল্লিতে যা যা ঘটেছিল
তার সঙ্গে কনফারেন্স কলে লকহিড মার্টিনের পাঁচজন প্রকৌশলী যুক্ত হন। পরামর্শ মতো, পাইলট দুবার ‘টাচ অ্যান্ড গো’ অবতরণের চেষ্টা করেন। যাতে আটকে থাকা নোজের গিয়ার সোজা হয়, কিন্তু তা করতে গিয়ে পাইলট ব্যর্থ হন।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নোজ ও ডান দিকের ল্যান্ডিং গিয়ারের হাইড্রোলিক সিস্টেমের এক-তৃতীয়াংশ তরল পানি ছিল। এ ধরনের অবস্থার জন্য নজরদারির ঘাটতি ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার সময় তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট। ফলে ওই পানি বরফে পরিণত হয়ে জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুনঃ যে দেশে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ‘থাড’ স্থাপন হলো
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই যুদ্ধবিমানের দাম কমানো হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং লকহিড মার্টিনের মধ্যে একটি প্রাথমিক চুক্তি অনুসারে, ২০২১ সালে প্রতিটি যুদ্ধবিমানের দাম প্রায় ১৩৫.৮ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৪ সালে ৮১ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।