কারাগারে রিমান্ডে অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, এটাই হয়ে ওঠে তার জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অধ্যায়। গ্রেফতারের পর যে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন, তার চূড়ান্ত ধকলেই তার শরীরে বাসা বাঁধে মরণব্যাধি ক্যান্সার। সেই থেকেই শুরু হয় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া।
দুঃসময়ের এই মরণদ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে লজ্জা-সংকোচ ভুলে তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া ও আর্থিক সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন।
দুঃসময়ের এই মরণদ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে লজ্জা-সংকোচ ভুলে তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া ও আর্থিক সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন।
মুফতি আবদুল্লাহ তামিম
এই মানুষটি আর কেউ নন, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহমতুল্লাহি আলাইহির বিশ্বস্ত খাদেম, খলিফা ও ছায়াসঙ্গী মাওলানা এনামুল হাসান ফারুকী। তার গ্রেফতারের মূল কারণও ছিল বাবুনগরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছায়াসঙ্গী হওয়ার অপরাধ।
ফারুকীর দুঃখগাথা শুধু রোগের নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নির্যাতন ও অবিচারের এক বেদনাদায়ক কাহিনী। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে বাবুনগরীর অনুসারী হওয়ার কারণে তাঁকেও কারাগারে যেতে হয়। রিমান্ডে চলতে থাকে অকথ্য মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। সেই নির্যাতনের ধকলেই তার শরীর ভেঙে পড়ে ভয়াবহভাবে। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। ডাক্তাররা তখনই জানিয়ে দেন, কমপক্ষে এক বছর সম্পূর্ণ বিশ্রাম ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
কিন্তু বিশ্রামের আগেই ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তাকে শারীরে ধরা পড়ে মরণব্যাধি ক্যান্সার। শরীর আরও দুর্বল হয়ে যায়। বাংলাদেশে চিকিৎসার সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা পাঁচ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ভারতীয় চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আর কোনো চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে থাইল্যান্ড আমেরিকা বা চিনে যেতে হবে।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতে চার দফা কেমোথেরাপি এবং চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তাছাড়া একের পর এক মামলা মোকাবিলায় ব্যয় হয়েছে আরও ৩৬ লাখ টাকা। এখনো অন্তত এক কোটি টাকার প্রয়োজন পূর্ণ চিকিৎসার জন্য। অথচ ফারুকী প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তাকে চায়না গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
অর্থাভাবে সর্বশেষ তিন মাস ধরে তার চিকিৎসা কার্যত বন্ধ আছে। ধীরে ধীরে শরীর আরও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, হাত-পায়ের রঙ পরিবর্তিত হচ্ছে। অর্থকষ্ট আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাকে ভেতর থেকে ভেঙে দিচ্ছে।
সবশেষে মাওলানা এনামুল হাসান ফারুকী চিকিৎসা গ্রহণের তীব্র ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন—যদি আল্লাহ চাই আর মানুষের সহায়তা মিলে যায়, তবে তিনি আবার চিকিৎসার টেবিলে বসতে চান, জীবনকে বাঁচাতে শেষ চেষ্টা করতে চান।
দুঃসময়ের এই মরণদ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে লজ্জা-সংকোচ ভুলে তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া ও আর্থিক সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন। সন্তান ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ফারুকী এখন কেবল আল্লাহর রহমত ও মানবিক মানুষের সাহায্যের অপেক্ষায় আছেন।
দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি বিনীত আবেদন, আল্লামা বাবুনগরী রহমতুল্লাহি আলাইহির এই বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী, খলিফা ও সেবক মাওলানা এনামুল হাসান ফারুকীর জন্য আপনারা দোয়া করুন। যার যার অবস্থান থেকে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। হয়তো আপনার একটি সাহায্যই এই নিবেদিতপ্রাণ মানুষের জীবন রক্ষার শেষ অবলম্বন হতে পারে।