সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মারামারিতে ৫৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টায় উপজেলার লক্ষ্মীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জামালগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন, এসআই পঙ্কজ ঘোষ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত লক্ষীপুর গ্রামের শামছুল আলমের ছেলে এমরুল (৪০) ও শিমুল (৩২), হোসেন মিয়ার ছেলে আপন (১৬), উসমান গণীর ছেলে লাহিম উদ্দিন (৪৫), রইছ মিয়ার ছেলে এমরুল হক (৫০), হোসেন নূরের ছেলে হুমায়ূন (৩৫), খসরু মিয়ার ছেলে রিদয় (২৪), মৃত সুন্দর আলীর ছেলে শহিদুর (৩৫)সহ ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার লক্ষীপুর বাজারের বটতলায় ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি করার জন্য সভা আহবান করা হয় । একপর্যায়ে কমিটির সাংগঠনিকের নাম প্রস্তাব নিয়ে ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলামব ওমির ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি হয়। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার আবার দুই নেতার সমর্থকদের মারামারি হয়।
সদর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নাজিম উদ্দীন বলেন, কমিটির সাংগঠনিক এর নাম প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে কামরুল ইসলাম ও আব্দুল মতিনের কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে মারামারি হয়। পরবর্তীতে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখি।
সদর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মো. বশির আহমদ বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা নেতৃবৃন্দসহ কিছুক্ষণের মধ্যে বসব। পরবর্তীতে আপনাদেরকে জানানো হবে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সাজ্জাদ মাহমুদ তালুকদার জানান, আমি কমিটি গঠনের সময় অতিথি ছিলাম। নাম প্রস্তাব নিয়ে আমিরুল ইসলাম ওমির ও আব্দুল মতিনের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। উপস্থিত নেতৃবৃন্দসহ তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি শান্ত করি। মঙ্গলবার আবারো উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি সংঘটিত হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. শফিকুর রহমান বলেন, মারামারির খবর শুনে উপজেলার নেতৃবৃন্দসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। উপজেলা কমিটি মারামারির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় কেউ লিপ্ত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শরিয়ত উল্ল্যাহ জানান, মারামারির ঘটনায় গুরুতর আহত ২০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহত ৩৫ জনকে জামালগঞ্জ হাসাপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিকে কেন্দ্র করে মারামারি সংঘটিত হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জামালগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মারামারি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।