জুলাই সনদের সাংবিধানিক বিধানগুলো কার্যকরের অংশ হিসেবে একটি সাংবিধানিক আদেশ জারি করতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং এর ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে গণভোট হবে। আজ (১৭ সেপ্টেম্বর) বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার তৃতীয় দিনের শুরুতে কমিশন তাদের আইনি প্যানেলের সুপারিশ উপস্থাপন করে।
আইনি বিশেষজ্ঞদের প্যানেল প্রস্তাব করেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই ঘোষণার ২২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে একটি সংবিধান আদেশ (CO) জারি করতে পারে, যেখানে জুলাই চার্টার ২০২৫–এ উল্লেখিত মূল সংস্কারসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই সংবিধান আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে এই সংবিধান আদেশকে গণভোটে উপস্থাপন করা যেতে পারে, যা পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান আদেশে গণভোটের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞের সুপারিশ, যদি গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি লাভ করে, তবে সংবিধান আদেশকে তার জারি হওয়ার তারিখ থেকে বৈধ বলে গণ্য করা হবে।
৩ আগস্ট ঘোষিত জুলাই ঘোষণার ২২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যমান সংবিধান এবং সব রাষ্ট্র ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক সংস্কার আইনসম্মত উপায়ে সম্পন্ন করার অভিপ্রায় প্রকাশ করছে। এর উদ্দেশ্য হলো সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা, ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আইনি প্যানেলের এই প্রস্তাবের পর রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনা শুরু করে।
১১ সেপ্টেম্বর সংলাপের প্রথম দিনে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একটি নথি উপস্থাপন করে, যেখানে পূর্ববর্তী দলীয় ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শের ভিত্তিতে সম্ভাব্য বাস্তবায়ন পদ্ধতিগুলো উল্লেখ করা হয়।
এর আগে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে পুরো বা আংশিক সনদের ওপর গণভোট; রাষ্ট্রপতির বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ; গণপরিষদ; পরবর্তী সংসদে আইন প্রণয়ন; সংসদকে সাংবিধানিক সংস্কার পরিষদ হিসেবে মনোনীত করা; এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ। বিশেষজ্ঞরাও অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও সাংবিধানিক আদেশের মতো বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন।