সাদাপাথর লুট: কোম্পানীগঞ্জ পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর গ্রেপ্তার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে পাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১২টার পর থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথ অভিযান শুরু করেছে।

ধলাই নদীর তীরবর্তী সাদাপাথর এলাকা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত পাথরগুলো পুনরায় নদীতে ফেলে দেয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, চুরি হওয়া সব পাথর ফেরত না আসা পর্যন্ত অভিযান চলবে। পাথর চুরির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় রেখে অভিযান চালানো হচ্ছে। সাদাপাথরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা ও অবৈধ উত্তোলন বন্ধ করাই মূল লক্ষ্য। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এর আগে জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্ট যৌথবাহিনীসহ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে, অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ করার জন্য অভিযান চলবে, পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সকলকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা হবে, চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হবে।

এদিকে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে পাথর লুটের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। রাষ্ট্রীয় পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন ও লুটের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়। বুধবার দুপুর দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল সাদাপাথর কেন্দ্র পরিদর্শন করে দোষীদের শনাক্তের কাজ শুরু করে।

অভিযান-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কয়েক শ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় খনিজ সম্পদ অবৈধভাবে উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদক অভিযান চালিয়েছে। প্রাথমিকভাবে তারা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন এবং লুটপাটে কারা সম্পৃক্ত ছিলেন তা শনাক্তের কাজ চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা অভিযোগ করেছেন, প্রভাবশালী মহল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আশ্রয়ে এই লুটপাট বছরের পর বছর ধরে চলছে। এতে শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, পুরো পর্যটন শিল্পই হুমকির মুখে পড়েছে।