প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সব ধরনের ক্রয়প্রক্রিয়া উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ করতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এর ফলে আগের সরকারের সময় চলমান সব সরাসরি দরকষাকষি বা আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আমেরিকা। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত মার্কিন অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন ২০২৫- এ এমন তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স দেওয়ার মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে এবং কার্যক্ষেত্রেও তা অনুসরণ করা হচ্ছে। তবে সরকারি ক্রয়চুক্তির সীমিত তথ্যই প্রকাশ করা হয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা না করলেও সংক্ষেপে ফল প্রকাশ করেছে, যা নির্দিষ্ট সময়ে জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানে স্বাধীন নয়।
বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা আরও বাড়াতে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো– অর্থবছর শেষে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা, বাজেট নথি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী প্রস্তুত করা, বাজেটে নির্বাহী দপ্তরগুলোর ব্যয় খাত আলাদাভাবে উপস্থাপন করা, সরকারের আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা, সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাধীনতা প্রদান এবং যথেষ্ট সম্পদ ও সময়োপযোগী পূর্ণাঙ্গ বাজেট নথিতে প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া, নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সুপারিশ, বিশ্লেষণ ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা প্রকাশ করা, প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের তথ্য প্রকাশ করা এবং সরকারি ক্রয়চুক্তির তথ্য জনসমক্ষে আনা।
আগের সরকার নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও অনুমোদিত বাজেট প্রকাশ করলেও অর্থবছর শেষে প্রতিবেদন ঠিক সময়ে দেওয়া হয়নি। বাজেট নথি সাধারণভাবে নির্ভরযোগ্য হলেও আন্তর্জাতিক মান অনুসারে প্রস্তুত হয়নি।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের ক্রয়প্রক্রিয়া এখন থেকে স্বচ্ছ হবে: আমেরিকা
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আর্থিক স্বচ্ছতা কার্যকর সরকারি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা বাজারে আস্থা তৈরি করে এবং আমেরিকার কোম্পানির জন্য সমান প্রতিযোগিতার সুযোগ আনে।
২০২৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪০টি দেশ ও সংস্থার মধ্যে ৭১টি ন্যূনতম স্বচ্ছতার মানদণ্ড পূরণ করেছে, ৬৯টি ব্যর্থ হয়েছে। তবে এর মধ্যে ২৬টি দেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেট নথি, চুক্তি ও লাইসেন্স প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে এবং যেসব দেশ ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ, তারা এই সময়কালে কতটা অগ্রগতি করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাজেট নথির প্রাপ্যতা, পূর্ণতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং সরকারি চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা মূল্যায়ন করেছে।