মোদী দেখতে সুন্দর কিন্তু খু’নি: ট্রাম্প

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কঠোর স্বভাব বোঝাতে তাকে ‘খুনি’বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প দাবি করেন, তার হস্তক্ষেপের ফলেই পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছিল। এ সময় ‍তিনি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

ট্রাম্প তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাহ্যিক চেহারা ও কঠিন মনোভাবের মধ্যে বৈসাদৃশ্য তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি দেখতে ভালো চেহারার একজন মানুষ। আর তাকে দেখলে মনে হবে, তোমার বাবার মতো একজন মানুষ। কিন্তু ‘সে যেন একজন খুনি’, সে খুবই কঠোর। সে বলল, না, আমরা লড়াই করব। আমি বললাম, ‘ওহ, এ কি সেই একই মানুষ যাকে আমি চিনি?’ তবে কিছুক্ষণ পর সব ঠিক হয়ে গেল — ‘আসলে তারা দুজনই ভালো মানুষ।’

ট্রাম্প অবশ্য উল্লেখ করেন, মোদির প্রতি তার ‘অশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা’রয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

একইভাবে ট্রাম্প বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও একজন দুর্দান্ত মানুষ। তাদের একজন ফিল্ড মার্শাল আছে। আপনারা জানেন কেন সে ফিল্ড মার্শাল? সে একজন দুর্দান্ত যোদ্ধা। সে সত্যিই তাই। সেও একজন দুর্দান্ত মানুষ। আর তাই আমি তাদের সবাইকে চিনি।

ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে এবং সাতটি বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর আসে, তখন তিনি পরিস্থিতি থামাতে হস্তক্ষেপ করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তখন আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করে বলেছিলাম, ‘আমরা আপনার সঙ্গে কোন বাণিজ্য চুক্তি করতে পারব না। সে বলে, না, না, আমাদের একটা বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। আমি বললাম, না, আমরা পারব না। আপনি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করেছেন, আমরা তা (চুক্তি) করব না। এরপর তারপর আমি পাকিস্তানকে ফোন করে বললাম, ‘আমরা তোমাদের সঙ্গে বাণিজ্য করব না। কারণ তোমরা ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করছো। আপনারা জানেন, তারা দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ।

ট্রাম্প বলেন, আমি বলেছিলাম, আমি উভয় দেশের ওপর ২৫০ শতাংশ করে শুল্ক আরোপ করব। এর মানে হলো, আপনি কখনো ব্যবসা করতে পারবেন না…এর মধ্য দিয়ে আমি এই কথাটা সুন্দর করে বলেছিলাম, আমরা আপনাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাই না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আক্ষরিক অর্থেই দুই দিন পর, তারা ফোন করে বলল, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি।’এবং তারা যুদ্ধ বন্ধ করে দিল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো যুদ্ধ ছিল না, কেউ মারা যায়নি। এর মাধ্যমে আমরা লাখ লাখ জীবন রক্ষা করেছি। এটা কেমন? আশ্চর্যজনক না? এখন, আপনারা কি মনে হয় বাইডেন এটা করতেন? আমার মনে হয় ‘না’।

ট্রাম্প এই ঘটনাটিকে তার কূটনৈতিক দক্ষতার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। তবে ভারত সরকার এর আগেও বহুবার ট্রাম্পের এই ধরনের মধ্যস্ততার দাবি অস্বীকার করে জানিয়েছে, সংঘর্ষবিরতি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছিল।

Check Also

নাহিদ-আখতারসহ এনসিপির শীর্ষ নেতারা যেসব আসনে ভোট করছেন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।তরুণদের নিয়ে গড়া এই দল পুরোদমে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *