‘শিবির সম্পর্কে খারাপ ধারণা ছিল, আজ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম দেখছি’

‎ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো: সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রজন্মের হাত ধরেই আগামীতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। সেই সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়েই প্রজন্মের জন্য কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির। স্বৈরাচারের শেখ হাসিনার সীমাহীন দমন নিপীড়নের পরও বিশ্রাম নেয়নি তারা।

‎শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বনমালী শিল্পকলা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এসএসসি/দাখিল সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাবনা শহর শিবিরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‎তিনি বলেন, শিবিরের ক্রিয়েটিভ কাজগুলো সহ্য করতে না পেরে একটি মহল ভয়াবহ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা চাই দেশটা সুখে থাকুক শান্তিতে থাকুক। সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন হোক। দেশকে ভালোবাসার প্রমাণ বারবার দিয়েছে শিবির। স্বৈরাচারের জুলুম নির্যাতনের এমনও সময় গেছে যে, আমরা ওপেন পোগ্রাম না করতে পেরে জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে উপহার পৌঁছে দিয়েছি। আমরা ভালো কাজ করব, খারাপ কাজ করতে দেব না। দুর্নীতি করব না, দুর্নীতি কাউকে করতেও দেব না।

‎তিনি মেধাবীদের উদ্দেশে বলেন, মেধাবীদের ঘাড়ের ওপর দিয়ে প্রত্যাশার ভার অনেক বেশি। গতানুগতিক পরিবেশে গা ভাসা দিলে তুমিও আস্তাকুঁড়ে নিপতিত হবে। তুমি যদি পা পিছলে যাও তাহলে আজকের ভালো রেজাল্ট আগামীতে তোমার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে। যদি অনেক বড় হয়ে দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠো, তাহলে সমাজের লোক তোমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। ‎যারা আজকে ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি তাদেরকে তোমরা সান্ত্বনা দেবে। ছোট্ট একটি পরিশ্রম সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কাজ দেবে।

‎স্বৈরাচারের দুর্নীতির সামান্য নমুনা তুলে ধরে তিনি বলেন, মিরপুরের মেট্রোরেল রেল ঠিক করতে এক বছর লাগবে বলে জানিয়েছিল স্বৈরাচার হাসিনা সরকার। এ ছাড়াও বাজেট দিয়েছিল সাড়ে তিন শ’ কোটি টাকা। এরপর বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়ে মাত্র দেড় মাসে ঠিক করেছে। যেটা ১৮ কোটি টাকা লেগেছিল। প্রতিটি সেক্টরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনিয়ম বাসা বেঁধেছিল। প্রতিটি সেক্টরে মেধাবীরা সততার সাথে কাজ করলে দ্রুত দেশ উন্নত শিখরে পৌঁছবে। অল্পদিনেই অনেক বিদেশীরা আমাদের উন্নয়ন দেখে হিংসা করবে।

‎কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিবিরের আয়োজনে আজকের প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানটি আমাদের জন্য স্বরণীয় হয়ে থাকবে। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দিয়েছেন। আমাদের জীবনচলার ক্ষেত্রে কী কী জিনিস প্রয়োজন সেটি আমাদের বলেছেন। বিশেষ করে নৈতিক চরিত্রের বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন। ও বড় হয়ে একজন ভালো মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে বিভিন্ন টিপস দিয়েছেন। শিবির সম্পর্কে আমরা ইতোপূর্বে অনেক খারাপ ধারণা ছিল। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানে এসে সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম দেখছি।

‎পাবনা শহর শিবিরের সভাপতি গোলাম রহমান জয়ের সভাপতিত্বে ও শহর শিবিরের সেক্রেটারি এসএম হাবিবুল্লাহর সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক ছিলেন, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফফার খান, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কলামিস্ট শমসের আলম হেলাল, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় শিক্ষ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, পাবনা পৌর জামায়াতের আমির আব্দুল লতিফ, ন্যাশনাল ডক্টর ফোরাম পাবনা জেলা সভাপতি ডা: মাসুদ রানা সরকার।

‎অনুষ্ঠানের শুরুতে জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা দেয়া হয়। শেষে ক্রেস্ট ও শিবিরের প্রকাশনা সামগ্রী দেয়া হয়।