বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার জনপ্রিয় ইউটিউবার

পাকিস্তানের বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশটির বিখ্যাত ইউটিউব তারকা সাদ উর রহমান। ‘ডাকি ভাই’ নামে পরিচিত এ ইউটিউবারের বিরুদ্ধে অনলাইনে জুয়া ও প্রতারণামূলক অ্যাপের প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) ভোরে নিজ দেশ ত্যাগ করার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।

ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনসিসিআইএ) ডাকি ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এবং আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার দুপুরে ডাকি ভাইকে লাহোরের একটি বিচারিক আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত এনসিসিআইএ-কে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে এবং আগামী মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) তাকে পুনরায় আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ডাকি ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার ইউটিউব চ্যানেলে অনলাইন জুয়া ও বেটিং অ্যাপের প্রচার চালাচ্ছিলেন। এসব অ্যাপে বিনিয়োগ করে অসংখ্য মানুষ আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

এনসিসিআইএ-এর দাবি, ডাকি ভাইয়ের প্রলোভনে পড়ে সাধারণ মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থ এই অ্যাপগুলোতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন। এজাহারে তার ইউটিউব চ্যানেলের অন্তত ২৭টি ভিডিওর লিংক যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে এসব অ্যাপের প্রচারণার প্রমাণ রয়েছে। তবে সেগুলোর কয়েকটি বর্তমানে আর অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না।

এনসিসিআইএ-এর তদন্তে উঠে এসেছে, জুয়া অ্যাপগুলো বিনিয়োগকারীদের কোনো মুনাফা দেয়নি। তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করেছে। এছাড়া, এসব অ্যাপের কোনোটিই পাকিস্তানে নিবন্ধিত নয়।

জুয়া অ্যাপের প্রচারণার বিষয়ে গত ১৩ জুন এনসিসিআইএ একটি তদন্ত শুরু করেছিল এবং ডাকি ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তদন্ত কার্যক্রমে অংশ নেননি। এরপর তার নাম প্রভিশনাল ন্যাশনাল আইডেন্টিফিকেশন লিস্টে (পিএনআইএল) অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শনিবার (১৬ আগস্ট) এনসিসিআইএ জানতে পারে, ডাকি ভাই দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন। লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে তিনি আটক হন। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

এনসিসিআইএ আরও জানিয়েছে, ডাকি ভাই কোনো সরকারি অনুমোদন ছাড়াই জুয়া অ্যাপের ‘কান্ট্রি ম্যানেজার’ হিসেবে কাজ করছিলেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে ইলেক্ট্রনিক্স ফরজিং, ইলেক্ট্রনিক্স ফ্রড, স্প্যামিং এবং স্পুফিংসহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে।