বন্ধুদের জন্য সিক্রেট পার্টির আয়োজন, রুমে ঢুকে দেখলেন তার নিজেরই স্ত্রী!

বিয়ে মানে ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার এক বন্ধন। মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। কিন্তু কখনে কখনো বিয়েই হয়ে ওঠে কারো কারো জীবনের সর্বনাশ! সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হয় না এবং অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর ফলে সেই বিশ্বাসের বন্ধনকে অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় এবং দুই পরিবারের পরিজনদের হতবাক করে দেয়।

তেমনই এক গল্প এলো প্রকাশ্যে।
ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় পডকাস্ট প্রগ্রাম ‘বাজ বিহাইন্ড মাইক’। বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব অনুষ্ঠানটিতে হাজির হন। স্লিউথস ইন্ডিয়া নামক একটি বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নমন জৈন সম্প্রতি হাজির হয়েছিলেন সেখানে।

পডকাস্টে একটি সম্পর্কের টানাপড়েনের গল্প তুলে ধরেছেন নমন। তিনি একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন যা শুরু হয়েছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ দিয়ে। শিগগিরই তদন্ত এমন একদিকে মোড় নেয়, যা সিনেমোকেও হার মানায়। হাজার হাজার মামলা সমাধান করেছেন নমন।
তবে তার জীবনের অন্যতম একটি কেস এটি।

নমন জানিয়েছেন, দম্পতিটি ছিল উচ্চবিত্ত। সেই নারী মুম্বাইয়ের বাসিন্দা, আর তার স্বামী গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু সেখানকার সবচেয়ে বিত্তশালী। নমন জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি গ্রামে বড় হলেও তিনি বিদেশে পড়াশোনা করেছেন।

কিন্তু বিয়ের দুই মাস পরেই মহিলাটি তার বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর দুজনের কথা বলা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। নমন জানিয়েছেন, এই দাম্পত্য কলহের কারণ কেউ বুঝতে পারছিলেন না। দম্পতি এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিল। কিন্তু রহস্য ক্রমে দানা বাঁধছিল। উদ্বিগ্ন হয়ে সেই নারীর মা-বাবা স্লিউথস ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা নমনকে অনুরোধ করেন, ‘আপনি দয়া করে তদন্ত করে আমাদের বলুন তাদের মধ্যে সমস্যা কী।’

নমন এবং তার দল ব্যক্তিটিকে খুব কাছ থেকে অনুসরণ করা শুরু করে। নমন বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি যে ওই ব্যক্তি অফিসে যান এবং তারপর সোজা বাড়িতে ফিরে আসেন। তার জীবনে অতিরিক্ত কিছুই ছিল না।’ এমনকি তার কর্মচারী এবং ড্রাইভারও এই রুটিন নিশ্চিত করেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নমন ব্যক্তিটির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। দুজনেই এরপর বেশ কয়েকবার দেখা করেন। অবশেষে একদিন মদ্যপ অবস্থায় মুখ খোলেন ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমার বিয়ের সময় আমার তিন বন্ধু আমেরিকায় থাকায় বিয়েতে যোগ দিতে পারেনি। আমি বিয়ের পরে তাদের জন্য একটি ব্যাচেলর পার্টির আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

সেই সময় ওই ব্যক্তির স্ত্রী কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন। তখনই বন্ধুদের ব্যাচেলর পার্টি দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। একটি হোটেলে পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। এমনকি তার বন্ধুদের জন্য এসকর্ট সার্ভিসও ছিল। ওই ব্যক্তিটিও তখন এমন একটি ঘরে গেলেন যেখানে একজন এসকর্ট ছিল। কিন্তু ঘরে ঢুকে তিনি যা দেখলেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। ওই ব্যক্তি নমনকে বলেন, ‘ঘরে ঢুকেই আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেল।’ নমন জানান, ওই এসকর্ট সার্ভিসের তরুণী আর কেউ নন, ওই ব্যক্তির স্ত্রী ছিলেন। এর পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন ব্যক্তি।

নমনের ব্যাখ্যা, ভুল দুজনেই করেছেন। ওই ব্যক্তি অন্য এক নারীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হতে চেয়েছিলেন। ওই নারীও ভুল করেছেন কারণ, বিয়ের পরেও তিনি এসকর্ট সার্ভিসে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। আরো তদন্তে জানা যায় যে, সেই নারী এই জীবনধারাই অব্যাহত রেখেছিলেন। নমন বলেন, ‘ওই নারীর নিম্ফোম্যানিয়া (নারীদের মধ্যে অমোঘ যৌন আকাঙ্ক্ষা বা অতিযৌনতার একটি ধরন। এটিকে সাধারণত যৌন আসক্তির একটি রূপ হিসাবে দেখা হয়।) ছিল। তিনি এটিই চাইতেন।’ নমন জানিয়েছেন, এমনকি পুরুষদের বেছে নেওয়ার আগে ওই নারী হোটেলগুলোকে অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষদের চেহারা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন।

নমনের সেই পডকাস্ট প্রচার হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে দর্শক-শ্রোতাদের মনে। অনেকেই সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকে গল্পটি কতটা বিশ্বাস্যযোগ্য তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র: কালের কণ্ঠ